ঢাকা | শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫,৬ আষাঢ় ১৪৩২

ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৯ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করলেন

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র আবারও এক নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা চালু করেছে, যেটা আগেরবারের চেয়েও অনেক বিস্তৃত। এই আদেশে ১২টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং আরও ৭টি দেশের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় যেসব দেশ: আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন।

আংশিক নিষেধাজ্ঞার আওতায় যেসব দেশ: বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলা।

ট্রাম্প জানিয়েছেন, এই নিষেধাজ্ঞা জারি করার পেছনে তাঁর বিদেশনীতি, জাতীয় নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাসবিরোধী লক্ষ্যগুলোর কথা বিবেচনা করা হয়েছে। তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে অফিসে ফেরার দিনই (২০ জানুয়ারি) একটি নির্বাহী আদেশে এসব নিষেধাজ্ঞার প্রস্তুতির নির্দেশ দেন, এবং ২১ মার্চের মধ্যে এই দেশের তালিকা দিতে বলেন তাঁর প্রশাসনকে।

ট্রাম্প দাবি করছেন, এসব দেশ থেকে আগত অনেকেই ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও থেকে যান—এবং সেক্ষেত্রে নিরাপত্তার ঝুঁকি বাড়ে। কিন্তু মানবাধিকার কর্মী ও বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের সার্বিক নিষেধাজ্ঞা এক ধরনের বৈষম্য তৈরি করে, কারণ এগুলো জাতিগত ভিত্তিতে মানুষকে আলাদা করে।

বিশেষ করে হাইতি, কিউবা ও ভেনেজুয়েলার মতো দেশগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বসবাসরত অভিবাসী সম্প্রদায়ের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। ওয়াশিংটনের ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি প্রমিলা জয়াপাল এই নীতিকে “বৈষম্যমূলক” বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে এটি যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্যের বিরুদ্ধাচরণ করে, অর্থনীতি ও সমাজকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

এছাড়া, ট্রাম্প সীমান্তে আশ্রয়প্রার্থীদের প্রবেশ বন্ধ করা, মানবিক সংকটে থাকা দেশের নাগরিকদের অস্থায়ী নিরাপত্তা সুবিধা বাতিল, এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি ছাত্রদের ভিসা সীমিত করাসহ একাধিক কঠোর অভিবাসন নীতি ঘোষণা করেছেন। এখন থেকে প্রতিটি ভিসা আবেদনকারীর সোশ্যাল মিডিয়া যাচাইও বাধ্যতামূলক করা হবে।

একটি ভিডিও বার্তায় ট্রাম্প বলেন, সম্প্রতি কলোরাডোর বোল্ডারে একটি ইসরায়েলপন্থী অনুষ্ঠানে এক মিশরীয় নাগরিকের হামলার ঘটনায় তিনি আরও দৃঢ় অবস্থানে যেতে বাধ্য হয়েছেন। তাঁর মতে, অপর্যাপ্তভাবে যাচাই করা বিদেশিদের প্রবেশ দেশের জন্য “চরম বিপদ” তৈরি করছে।

তিনি আরও জানান, যেসব দেশ ভবিষ্যতে উন্নতি ঘটাবে, তাদের এই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে; আবার নতুন হুমকি দেখা দিলে নতুন দেশ যুক্তও হতে পারে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান