ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ-ইউল্যাবের ঘটনায় সরকারের ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি বুদ্ধিজীবী লেখক প্রফেসর ড. সলিমুল্লাহ খান ও ঢাকা লিটফেস্টের আহসান আকবারের সাক্ষাৎকার নিয়েছে। এছাড়াও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে । তদন্তে নতুন মোড় নেয়ায় আরো কয়েকজন শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন জমা হতে পারে বলে জানা গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটির আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, তদন্ত কাজ অব্যাহত রয়েছে, তাই এ বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করা যাচ্ছে না। তবে গত ৮দিনে ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীসহ শতাধিক ব্যক্তির সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী প্রফেসর ড. সলিমুল্লাহ খানের সঙ্গেও কথা হয়েছে।
‘জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি আঁকার সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়াও জুলাই বিপ্লবে বিরোধিতা এবং বিদেশে শেখ হাসিনাপন্থি প্রচারে ‘গোপনে অর্থ ব্যয়ের তথ্য আসায় বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান কাজী আনিস আহমেদ এবং উপাচার্য ইমরান রহমানসহ অন্যান্য কর্তাব্যক্তিদের ভূমিকাও তদন্ত করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ঢাকা লিটফেস্টের প্রতিষ্ঠাতা আহসান আকবারের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। আরো কয়েকজন শিক্ষকের নাম আসায় নতুন করে তাদেরকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ’
তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, দৃশ্যত ঘটনাটি খুব ছোট মনে হলেও তদন্ত করতে গিয়ে এর গভীরতা অনেক বেশি বলে মনে হয়েছে। ফলে আমাদেরকে রাতদিন পরিশ্রম করতে হচ্ছে। চেষ্টা করেছিলাম চলতি মাসেই প্রতিবেদন জমা দিতে কিন্তু নতুন নতুন তথ্য বেরিয়ে আসায় আরো কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। আশা করছি আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে পারবো।
এদিকে গত রোববার দ্য ফিউচার ফোরামের আয়োজনে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)-তে ‘সফট পাওয়ার, হার্ড অ্যাবিউজ’: আওয়ামী লীগের মিডিয়া মাফিয়া’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের মিডিয়ায় তেমনভাবে আলোচনায় না আসা সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের একটি বিপজ্জনক অস্ত্র, ‘সফট পাওয়ার’ নিয়ে আলোচনা করা হয়।
কীভাবে সাবেক সরকার ‘সফট পাওয়ার’ ব্যবহার করে তাদের সহযোগীদের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে একটি নির্মম ও অগণতান্ত্রিক শাসনকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল সেগুলো তুলে ধরেন বক্তারা।
আলোচনায় উঠে আসে, জেমকন গ্রুপের কাজী আনিস আহমেদের ভূমিকা। এছাড়াও ইউল্যাবের উপাচার্য ইমরান রহমান এবং ট্রাস্টি বোর্ডের অন্যান্যরাও একই আদর্শে বিশ্বাসী এবং কট্টরপন্থী ফ্যাসিবাদের দোসর। তাদের বিরুদ্ধে বিদেশে বিপুল অংকের অর্থ পাচারের তথ্যও।
প্রসঙ্গত, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ-ইউল্যাব ক্যাম্পাসে দেয়ালে জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি আঁকার সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ঘিরে গড়ে উঠা আন্দোলনের ঘটনায় ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কমিটিকে তদন্ত সাপেক্ষে অবিলম্বে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।