ঢাকা | মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫,৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মুজিববাদী সংবিধান জাতিগত বিভাজনের অন্যতম হাতিয়ার

১৯৭২ সালের মুজিববাদী সংবিধান জাতিগত বিভাজনের অন্যতম হাতিয়ার, তাই এই সংবিধান বাতিল চেয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরুদ্দিন পাটওয়ারী। বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত এক বিক্ষোভ মিছিলে এই দাবি জানান তিনি।

জাতিগত বিভাজন জিইয়ে রাখার অপচেষ্টা ও এনসিটিবির সামনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদ এবং জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি এ বিক্ষোভের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, যারা এদেশে লাশের রাজনীতি কায়েম করতে যারা চায় তারাই এই হত্যাযজ্ঞ চালানোর পরিকল্পনা করেছে। এসময় পাহাড়ে সকলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে তারা আরো বলেন, দেশকে অস্থিতিশীল করতে দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র চলছে। কোনো ধরনের ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না।

এসময় এনটিসিবির সামনে বিবদমান দু’টি পক্ষের অবস্থান নেওয়ার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার তীব্র নিন্দা, হামলাকারী ও তাদের নেপথ্যের শক্তি খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনাসহ পাহাড়ে সকলকে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান বক্তারা।

বিক্ষোভ মিছিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ১৯৭২-এর সংবিধানে দেশের প্রতিটি জাতিকে স্বীকৃতি না দিয়ে সকলকে বাঙালি বলে একসূত্রে গাঁথতে চাওয়া হয়েছিল। এতে বাকি জাতিসত্ত্বাদের অধিকার হরণ করা হয়েছে। বাঙালি স্লোগান গত ৫ আগস্টে স্থায়ীভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে ছাত্র-জনতা। নিজেদের মধ্যে মতবিরোধ থাকলে সেটি আলোচনার টেবিলে নিরসন সম্ভব বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব অবহেলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি আরো বলেন, হামলাকারীদের ছবি তো স্পষ্ট। এখন হামলাকারীদের নিরাপদ রাখার জন্য ট্যাগিংয়ের রাজনীতি অব্যাহত রয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেফতার করে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি৷

১৯৭২ সালের মুজিববাদী সংবিধান জাতিগত বিভাজনের অন্যতম হাতিয়ার তাই এই সংবিধান বাতিল চেয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরুদ্দিন পাটওয়ারী বলেন, যারা এদেশে লাশের রাজনীতি কায়েম করতে যারা চায় তারাই এই হত্যাযজ্ঞ চালানোর পরিকল্পনা করেছে। এসময় পাহাড়ে সকলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, দেশকে অস্থিতিশীল করতে দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র চলছে। কোনো ধরনের ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না।

সারজিস আলম একই স্থানে একই বিষয়ে দুটো গ্রুপ তাদের অনুষ্ঠান করছে সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা থাকা প্রয়োজন ছিল কিন্তু সেটি ছিল না জানিয়ে বলেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দৃশ্যমান কোনো বিচার না হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আমাদের আস্থার জায়গা নষ্ট হবে। আর এটি নষ্ট হলে এই সিস্টেমকে কীভাবে নতুন করে তৈরি করতে হয় সেটা আমরা ভালো করেই জানি।

এসময় জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, এই হামলার পেছনে বড় কোনো ষড়যন্ত্র রয়েছে। প্রশাসনকে বলতে চাই, যারা হামলায় নেতৃত্বদানকারী ও এদের পেছনে যারা কলকাঠি নাড়ছে তাদেরকে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রিফাত রশীদ বলেন, ছাত্রলীগের কায়দায় শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারী ও এদের পেছনে কারা আছে তাদের খুঁজে বের করার আহ্বান জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের নবম-দশম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয়পত্র বইয়ের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দটি রাখা ও বাদ দেওয়াকে কেন্দ্র করে রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কার্যালয়ের সামনে ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ ও ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’ দুটি সংগঠন কর্মসূচি পালন করার সময়ে বুধবার দুপুরে দু’টি পক্ষ সংঘর্ষের জড়ায়। এতে দুপক্ষের অন্তত ১৬ জনের অধিক আহত হন। মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন আহতরা।