ঢাকা | মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫,৩১ আষাঢ় ১৪৩২

নাটোরে মেয়ে ও বাবা একসাথে দিচ্ছেন এইচএসসি পরীক্ষা

নাটোরের লালপুর উপজেলায় এসএসসি পাসের পর এবার বাবা ও মেয়ে একসঙ্গে দিচ্ছেন এইচএসসি পরীক্ষা। বাবা আব্দুল হান্নানের প্রবল ইচ্ছা শুধু এইচএসসি পরীক্ষা নয় মেয়ে হালিমা খাতুনের সঙ্গে একসঙ্গে মাস্টার্স পাস করতে চান।

আব্দুল হান্নান লালপুর উপজেলার গোপালপুর পৌরসভার নারায়ণপুর গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছোট ছেলে।

স্থানীয়রা জানায়, ২৫ বছর আগে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন নাটোরের লালপুরের ৪০ বছর বয়সী আব্দুল হান্নান। কিন্তু পাস করতে পারেননি। তারপরও হাল ছাড়েনি আব্দুল হান্নান। গত ২০২৩ সালে মেয়ের সাথে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে রুইগাড়ি হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। এবারের এইচএসসি ২০২৫ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তিনি। তার মেয়ে হালিমা খাতুনও আলাদা কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। শিক্ষার কোনো বয়স নেই, তারই উদাহরণ তৈরি করলেন তিনি।

বাবার সঙ্গে একই সঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষা দেয়ার অনুভূতি সম্পর্কে হালিমা খাতুন জানান, এটা তো খুশির খবর। সবাই বিষয়টাকে পজিটিভ হিসেবে দেখছেন এটাই আনন্দের। সবার কাছে দোয়া চান হালিমা।

আব্দুল হান্নান জানান, ১৯৯৮ সালে তিনি নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস হাই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হন। পরবর্তীতে আর লেখাপড়া করা হয়নি, নেমে পড়েন সংসার জীবনে। এরপর দীর্ঘ ২৫ বছর পর ২০২৩ সালে রুইগাড়ি হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেন। প্রথমে তিনি কাউকে না জানিয়ে স্কুলে ভর্তি হন এবং তার মেয়ের সঙ্গে পরীক্ষা দিয়ে এসএসসি পাস করেন এবং বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাজুড়ে প্রশংসায় ভাসতে থাকেন আব্দুল হান্নান। এ বছর তিনি বাঘা কাকড়ামারি কলেজ থেকে এবং তার মেয়ে হালিমা খাতুন গোপালপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।

এই বয়সেও পড়াশোনা কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল হান্নান জানান, আমার এসএসসি পাস করার প্রবল ইচ্ছা দিনে দিনে প্রবল হতে থাকে। এ জন্য ২০২১ সালে উপজেলার রুইগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম (ভোকেশনাল) শ্রেণিতে ভর্তি হই।

এসএসসি পরীক্ষার সময় তিনি বাবার কাছ থেকে পাওয়া চায়ের দোকান চালাতেন। চা বিক্রি করে লেখাপড়া কঠিন হয় তাই চায়ের দোকান ভাড়া দিয়ে তিনি এখন নিজের জমিজমা দেখাশোনা ও কৃষি কাজ করছেন এবং পাশাপাশি লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন।