ঢাকা | শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫,৩ মাঘ ১৪৩১

শীতে রুম হিটার কেনার আগে যা জানা জরুরি

শীতের প্রকোপ যত বাড়তে থাকে, ঘরের তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পেতে অস্বস্তিকর মাত্রায় পৌঁছে যেতে শুরু করে। বিশেষ করে ভোরবেলা এবং গভীর রাতে অতিরিক্ত গরম কাপড় ছাড়া ঘরে থাকা মুশকিল হয়ে পড়ে। নানা প্রতিকূল আবহাওয়ায় পরম আশ্রয়ের জায়গাটি রীতিমতো হিমঘরে পরিণত হয়।

এমন পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য একটু উষ্ণতা চাই। আর এখানেই আসে রুম হিটার, যা মাঘের শীতেও ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে পারে। চলুন জেনে নিই, গৃহস্থালি যন্ত্রটি কেনার সময় কোন বিষয়গুলো যাচাই করা উচিত। কেনার সময় যে বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দিতে হবে:

উষ্ণতায়নের ক্ষমতা

মূল উদ্দেশ্য যেহেতু ঘর গরম করা, তাই প্রথমেই যন্ত্রটির ক্ষমতা কতটুকু, তা বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত প্রতি বর্গফুট গরম করার জন্য ন্যূনতম ১০ ওয়াট ক্ষমতার দরকার হয়। সে অনুযায়ী ছোট একটি ঘরের জন্য ন্যূনতম ৬০০ ওয়াট হিটারের প্রয়োজন হবে। আর বড় জায়গাগুলোর জন্য ২,০০০ ওয়াটের মডেল উপযুক্ত হবে। ঘরের ক্ষেত্রফলটি ভালোভাবে মাপা জরুরি। জায়গার তুলনায় কম ক্ষমতার হিটার নিলে সঠিক মাত্রায় উষ্ণতা পাওয়া যাবে না,আবার অতিরিক্ত হয়ে গেলে বিদ্যুৎ অপচয় হবে।

নিরাপত্তা

বাজেট যেমনি হোক না কেন, এ ধরনের গৃহস্থালি যন্ত্র কেনার ক্ষেত্রে নিরাপত্তার ব্যাপারে কখনই আপস করা উচিত নয়। অত্যধিক তাপ সুরক্ষা, টিপ-ওভার সুইচ এবং অন্তর্নির্মিত থার্মাল ফিউজ থাকা হিটারগুলো যান্ত্রিক ত্রুটি বা আগুন লাগার ঝুঁকি কমায়। অ্যান্টি-ফায়ার প্লাস্টিক বা অটো শাট-অফ মেকানিজম অতিরিক্ত নিরাপত্তা নির্ভরযোগ্যতা বাড়ায়। এই ফিচারগুলো যন্ত্রকে সার্বক্ষণিক সতর্ক নজরে রাখার বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি দেয়।

বিদ্যুতের পূর্ণ ব্যবহার

সর্বোচ্চ মাত্রার উষ্ণতা দেওয়ার জন্য যন্ত্রটি কতটুকু বিদ্যুৎ শক্তি খরচ করছে, তা ভালো মানের হিটার বাছাইয়ের অত্যাবশ্যকীয় একটি শর্ত। এনার্জি-এফিশিয়েন্ট হিটারগুলো বিদ্যুৎ বিল কমায়। থার্মোস্ট্যাট এবং ইকো-এনার্জি মোড সঠিকভাবে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে, যাতে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ নষ্ট না হয়। সিরামিক হিটিং উপাদান ঘরের সর্বত্র সমানভাবে এবং দ্রুত তাপ বিতরণ করে, শক্তির অপচয় রোধ করে। এই বিষয়গুলোর প্রতি নজর রাখার ফলে একদিকে যেমন দীর্ঘ মেয়াদে বাজেট বাঁচানো যায়, অন্যদিকে পরিবেশকেও ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত রাখা যায়।

পোর্টেবিলিটি এবং ডিজাইন

যাদের ঘন ঘন বাসা বদলের প্রয়োজন হয় তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো গৃহস্থালি যন্ত্রপাতির ওজন। সহজে বহনযোগ্য হলে স্থানান্তর ও পুনরায় স্থাপনের কাজগুলো সহজ হয়ে যায়। বিশেষ করে ক্যারি-হ্যান্ডেল সমেত হাল্কা মডেলগুলো বহন করা সুবিধাজনক। লম্বা কমপ্যাক্ট ডিজাইনেরগুলো ঘরের জায়গা বাঁচায়। কিছু হিটার দেয়ালেও সেট করা যায়। নান্দনিক ও সুবিধাজনক নকশা হলে ঘরের সৌন্দর্য্যও বাড়ায়।

শব্দের মাত্রা

হিটার নির্বাচনের সময় আরও একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো এর শব্দ। সিরামিক প্রযুক্তি বা সাইলেন্ট অপারেশন মুডের মডেলগুলো ঘরের মধ্যে শান্ত পরিবেশ বজায় রাখার জন্য যথেষ্ট উপযোগী। অবশ্য পুরাতন ডিজাইনের ফ্যান হিটারগুলোর আওয়াজ থেকে রেহাই পাওয়ার উপায় থাকে না। এদিক থেকে অত্যাধুনিক ডিজাইনগুলো অনেকটা এগিয়ে। একেবারে পিন-পতন নিরবতা না দিতে পারলেও এগুলো কম শব্দ করে উষ্ণতা দিতে কোনো ঘাটতি রাখে না।

স্থায়িত্ব এবং ওয়ারেন্টি

ঘন ঘন মেরামত বা প্রতিস্থাপনের ঝামেলা থেকে বাঁচতে অবশ্যই হিটারের ওয়ারেন্টি দেখে নেওয়া উচিত। পরপর কমপক্ষে দুটি শীত মৌসুম কাটানোর জন্য কাঠামোগত উপাদান হিসেবে অগ্নিরোধী প্লাস্টিক, সিরামিক উপাদান বা মজবুত ধাতব উপাদানগুলোর প্রতি অগ্রাধিকার দিতে হবে। অন্তত এক বছরের ওয়ারেন্টি থাকলে যান্ত্রিক ত্রুটি রক্ষণাবেক্ষণের সুবিধা পাওয়া যায়। বিক্রয় পরবর্তী সার্ভিস ওয়ারেন্টি থাকলে দীর্ঘ মেয়াদে খরচ বাঁচায়।

এই বিভাগের আরও সংবাদ