মৃত্যুর ৬ বছরেও কার্যকর হয়নি বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায়, এখনও পলাতক আসামিরা। বিচার নিশ্চিত না হওয়ায় তাই শঙ্কিত পরিবার। আবরার ফাহাদের মায়ের আশা, অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই তার সন্তানের হত্যাকারীদের সাজা কার্যকর হোক।
‘অনন্ত মহাকালে মোর যাত্রা, অসীম মহাকাশের অন্তে’—এই সংকল্পেই জীবন গাঁথতে চেয়েছিলেন আবরার ফাহাদ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেলেও প্রযুক্তির বিশ্বে দেশকে তুলে ধরার ইচ্ছে থেকেই বেছে নিয়েছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট)।
২০১৮ সালে বুয়েটে ভর্তির পর থেকেই ছাত্রলীগের নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে থাকে আবরার। তড়িৎ প্রকৌশলের এই শিক্ষার্থী, বিদ্যুতের মতোই তীব্র, ন্যায় আর সত্যের পথে ছিল অবিচল, তার কণ্ঠ ছিল নির্ভীক। ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে ছিল অকুতোভয়। ক্যাম্পাস জীবনের অল্প সময়েই হয়ে উঠেছিল শিক্ষার্থীদের এক আস্থার কণ্ঠস্বর।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সন্ধ্যা নামে বুয়েটে, শেরে বাংলা হলে পিশাচের দল উন্মত্ত অতিকায় মাতে আবরারের কণ্ঠ রোধ করতে, নিভে যায় এক তারা।
শিক্ষকরা বলছেন, ভিনদেশি আগ্রাসনের প্রতিবাদে যেমন আগ্রাসী ছিল আবরার, ব্যক্তি জীবনে ছিল তার থেকেও বেশি বন্ধুসুলভ, তুখোড় ছিল পড়াশুনাতেও।
মৃত্যুর মধ্য দিয়ে আবরার ফাহাদ যেমন বুয়েট শিক্ষার্থীদের মুক্ত করেছে ক্ষমতার আধিপত্য ও নির্যাতনের হাত থেকে, তেমনি জীবন উৎসর্গ করে অনুপ্রেরণা হয়েছিল বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনেও।
৬ বছর পেরিয়েছে, আবরার নেই ঘরে। সন্তান হারানোর বেদনা যেমন কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে মাকে, তেমনি বিচার না পাওয়ার শঙ্কা আশাহত করছে তার পরিবারকে।
আবরার ফাহাদ নিজের কলম আর কণ্ঠ দিয়ে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। তবে তার কণ্ঠ রোধ করে দিয়েছিল একদল অন্ধ সহিংসতা। কিন্তু রোধ করা যায়নি তার কণ্ঠ। আববার ফাহাদের প্রতিবাদী কণ্ঠ আজ সরব হয়েছে ন্যায়বিচার, স্বাধীন মত, আর তরুণ প্রজন্মের সাহসের প্রতীক হিসেবে।






