বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে গত ১১ মার্চে হওয়া একটি বৈঠক নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দুই মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম ফেসবুকে ভিন্ন ভিন্ন দুইটি পোস্ট করেন। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ‘হাসনাত ও সারজিসকে তাদের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে স্থায়ী বহিস্কার করা হলো’ শীর্ষক দাবিতে একটি চিঠির ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে৷
পদ থেকে অব্যাহতি ও সদস্যপদ স্থগিত প্রসঙ্গে ছড়িয়ে পড়া ওই চিঠিতে বলা হয়, জাতীয় নাগরিক পার্টির এক জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির মূখ্য সমন্বয়ক দক্ষিণাঞ্চল হাসনাত আবদুল্লাহ ও মূখ্য সমন্বয়ক উত্তরাঞ্চল সারজিস আলমের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টতা, দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর সাথে বৈরী সম্পর্ক তৈরি, পার্টিতে সিনিয়রদের সাথে (বিশেষ করে নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, সামান্তা শারমীন)-বেয়াদবি, একক আধিপত্য, ছাত্রলীগের অতীত পশুত্বপনা এখনো আচরণে থেকে যাওয়া, ঘোরা ডিঙ্গিয়ে ঘাস খাওয়াসহ অগণিত কারণে, এই দুইজনের স্বীয় পদ স্থগিত করা হলো এবং তাদের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো। এনসিপির সবাইকে এই দুইজনের সাথে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার জরুরি নির্দেশ দেওয়া হলো।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হাসনাত-সারজিসের ফেসবুক স্ট্যাটাস বিতর্কে জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে তাদের সদস্যপদ স্থগিত ও দল থেকে তাদের স্থায়ীভাবে বহিস্কার করার দাবিটি সঠিক নয় বরং এ সংক্রান্ত চিঠিটি ভুয়া বলে জানিয়েছে রাজনৈতিক দলটি।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জাতীয় নাগরিক পার্টির ফেসবুক পেজে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো প্রেস বিজ্ঞপ্তির পোস্ট বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আলোচিত চিঠিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে কয়েকটি ভিন্ন ফন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। আলোচিত বিজ্ঞপ্তিতে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে এনসিপির প্রচলিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ব্যবহৃত ফন্টের ভিন্নতা রয়েছে। মূলত, এনসিপির প্রেস বিজ্ঞপ্তির আদলে লোগো ও নাম ব্যবহার করে আলোচিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি তৈরি করা হয়েছে।
পরবর্তীতে, দলটির যুগ্ম সদস্যসচিব সালেহ উদ্দিন সিফাত চিঠিটি ভুয়া বলে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান ‘‘আমি এই ধরনের চিঠি ইস্যু করিনি। এই চিঠিটি ভুয়া।’’
সুতরাং, হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির নামে প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া ও বানোয়াট।