ঢাকার আকাশ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঘন মেঘে আচ্ছন্ন। শুরুতে হালকা বাতাসে ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নামতে থাকে প্রবল ধারাবর্ষণ। বাংলা ক্যালেন্ডারে জ্যৈষ্ঠ মাসের মাঝামাঝি (১৫ জ্যৈষ্ঠ) এমন প্রবল বর্ষণে বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন পেশার কর্মজীবী মানুষ। পথঘাটে বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরাও।
এমন অবস্থায় কিছুটা হতাশার খবর দিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠানটির সহকারী আবহাওয়াবিদ আফরোজ সুলতানা জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া একটি সুস্পষ্ট লঘুচাপ বর্তমানে ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এর ফলেই সারাদেশজুড়ে বৃষ্টির প্রভাব দেখা যাচ্ছে এবং এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে আরও দুই দিন, অর্থাৎ প্রায় ৪৮ ঘণ্টা।
সমুদ্র উপকূলে সতর্কতা, ভারী বর্ষণের আশঙ্কা
আবহাওয়াবিদদের তথ্য অনুযায়ী, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বিরাজমান গভীর লঘুচাপটি নিম্নচাপে রূপ নিয়েছে। এর ফলে সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় প্রবল থেকে অতিপ্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়াও, অতিবৃষ্টির কারণে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের শঙ্কাও রয়েছে। চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলার পার্বত্য অঞ্চলগুলোয় ধসের আশঙ্কার বিষয়ে পূর্বাভাসে সতর্ক করা হয়েছে।
নদীবন্দর ও উপকূলীয় এলাকায় ঝড়-বৃষ্টির বার্তা
বৃহস্পতিবার ভোরে দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য প্রকাশিত আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ছয়টি জেলার ওপর দিয়ে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার গতিতে দমকা হাওয়া ও বজ্রঝড় বয়ে যেতে পারে। এই জেলাগুলো হলো খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার।
এই অঞ্চলের নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ-হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে দেশের আরও কয়েকটি এলাকায় ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার গতিতে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে দমকা হাওয়া এবং বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মৌসুমী অবস্থার এই পরিবর্তনে জনজীবনে নতুন করে ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়াবিদরা পরামর্শ দিয়েছেন, নাগরিকদের এ সময় প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হওয়ার এবং সমুদ্র ও নদীপথে চলাচল সীমিত রাখার।