প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি জ্যাকবসন।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে মূল প্রকল্প ও সংস্কারে অব্যাহত মার্কিন সমর্থন চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস ও জ্যাকবসন পারস্পরিক স্বার্থের বিষয় এবং বিশ্বব্যাপী ইউএসএআইডির কাজ স্থগিত করার মার্কিন সিদ্ধান্তের ফল নিয়ে আলোচনা করেন। অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার অ্যাজেন্ডা, রোহিঙ্গা সংকট, অভিবাসন এবং দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেন তারা।
ঐকমত্য কমিশন গঠন এবং দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ শুরু করতে নেওয়া সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, যখন আমরা সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছি, রাজনৈতিক দলগুলো সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য জুলাইয়ের সনদে স্বাক্ষর করবে।
চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স জ্যাকবসন বলেন, একটি নতুন সরকারের জন্য নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক হওয়া উচিত। এ সময় সম্প্রতি চালু করা অপারেশন ডেভিলস হান্ট সম্পর্কেও খোঁজখবর নেন তিনি।
বাংলাদেশী সমাজে সমঝোতার আহ্বান জানিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, প্রতিশোধের চক্র ভাঙতে এবং দেশে শান্তি ও সম্প্রীতির ভিত্তি তৈরি করতে জনগণকে আহ্বান জানানো হয়েছে। আমরা সবাই এই দেশের সন্তান। প্রতিশোধের কোনো জায়গা থাকা উচিত নয়। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে অভিযানের সময় যেকোনো মূল্যে মানবাধিকার সমুন্নত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখায় মার্কিন প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মার্কিন সহায়তা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা।
বিশ্বের বিখ্যাত স্বাস্থ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর’বি-এর জীবন রক্ষাকারী প্রচেষ্টাসহ বাংলাদেশের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোতে সহায়তা বন্ধের মার্কিন সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রফেসর ইউনূস। বাংলাদেশ এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলের হাইতির মতো দেশে ডায়রিয়া ও কলেরা থেকে মৃত্যু প্রায় শূন্যে নামিয়ে আনতে আইসিডিডিআরবি’র ভূমিকা তুলে ধরেন তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ইউএসএআইডির সাথে যাই ঘটুক না কেন, সংস্কার ও পুনর্গঠনের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন প্রয়োজন। এখন এটি বন্ধ করার সময় নয়।