শোয়েব খানের বাস্কেটবলের শুরু বাংলাদেশের শীর্ষ ক্রীড়া বিদ্যাপীঠ বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি)। তখন প্রতিষ্ঠানটির বাস্কেটবল দলের প্রধান কোচ ছিলেন মো: মাহবুবুর রহমান। তার তত্ত্বাবধানেই ২০০৬ সালে বাস্কেটবলের হাতে খড়ি।ক্রমেই খেলাটির প্রেমে পড়ে জড়িয়ে যান এর সঙ্গে।এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এরপর একের পর এক বয়সভিত্তিক দলগুলো সাফল্যের সাথে পাড়ি দিয়ে জায়গা করে নেন বাংলাদেশ জাতীয় বাষ্কেটবল দলে। আর এরই মধ্যে বিকেএসপির ছাত্র থাকা অবস্থায় দুইবার মনোনীত হয়েছিলেন সেরা প্লেয়ার হিসেবে। এটি ২০০৮-০৯ সালের ঘটনা।
তখন থেকে অথাৎ প্রায় এক যুগ হতে চললো তিনি নিয়মিত খেলছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলে।
এতক্ষণ যাকে শোয়েব খান বললাম তিনি এ নামে পরিচিত হলেও কাগজে-কলমে তিনি কিন্তু মো. সামসুজ্জামান খান। খেলতে নামেন ৭ নম্বর জার্সিতে,শোয়েব নামেই।
জাতীয় দলে খেলার পাশাপাশি এখন তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অফিসার হিসাবে কর্মরত আছেন। তার এতসব ঈর্শনীয় পরিচয়ে সাফল্যের পালক যুক্ত হয়েছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে।তিনি যে এ বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী!তার আরেকটি বড় পরিচয় একজন কৃতী ছাত্র হিসেবে। তিনি ১ম শ্রেণীতে স্নাতক শেষ করেছেন শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিষয়ে।
পঞ্চগড়ে জন্ম নেয়া শোয়েবের পরিবারের সদস্য ছয়জন। চাকুরীজীবি বাবা আর মায়ের সাথে রয়েছে একমাত্র বড় ভাই। শোয়েব খান স্টুডেন্ট জার্নাল কে জানান , ‘আমার এই পর্যন্ত যতটুকু সাফল্য তার পিছনে পরিবারের অনেক বেশি সমর্থন ছিলো,ফলে লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধূলা চালিয়ে নিতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি”।এসময় তিনি স্মরণ করেন তার একসময়কার কোচ মাহাবুব স্যারের কথা।এ পর্যন্ত আসতে তার অনুপ্রেরণাই সবথেকে বেশি।
এই বাস্কেটবলের সুবাদেই ঘুরে বেরিয়েছেন বেশ কয়েকটি দেশও। ভারত, শ্রীলংকা, নেপাল, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম,বাহরাইন প্রভৃতি রাষ্ট্রে প্রতিনিধিত্ব করেছেন বাংলাদেশ দলের ।এর মধ্যে শুধু ভারতেই গেছেন ১৬ বার। স্বীকৃতি স্বরূপ ঝুলিতে তুলেছেন অসংখ্য পুরস্কার।
বাংলাদেশ জাতীয় বাস্কেটবল দলের সর্বোচ্চ অর্জন “সাফ গেমসে” ব্রোঞ্জ পদক, তিনি ছিলেন সেই দলের অন্যতম সদস্য।
শুধু বাস্কেটবলই নয়, তিনি একজন অ্যাথলেট, খেলেন হ্যান্ডবল, ক্রিকেট, ভলিবল,ফুটবল, ব্যাডমিন্টনও।
যার প্রমান তিনি দিয়েছিলেন আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগীতায়। নিজেকে প্রমান করেছিলেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে।
শোয়েব সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই অনুষদের ডীন এবং চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ড. মো: জাফিরুল ইসলাম বলেন, “আমি জানতাম ছেলেটা যবিপ্রবির ক্রীড়াঙ্গনের ফলাফলে যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে পারবে। তিনি আমার বিভাগের প্রথম ব্যাচের ছাত্র। সে শুধু ছাত্র নয়, একজন কৃতি ছাত্র। আমি তার সুস্বাস্থ্য ও সফলতা কামনা করি।”
বাংলাদেশ আন্ত:বিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়াপ্রতিযোগীতায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিচিত করানো ও যবিপ্রবির নিজস্ব অবস্থান তৈরি করার অন্যতম কারিগর ছিলেন এই শোয়েব খান। শোয়েব খান বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে সাতটি ডিসিপ্লিনেই আলো ছড়িয়েছেন, যেন এক ওয়ান ম্যান আর্মি।