ঢাকা | সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫,২৫ কার্তিক ১৪৩২

নীতিমালা প্রকাশ: একাদশে ভর্তির আবেদন ৩০ জুলাই থেকে

এবার যারা এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করে স্কুলের গণ্ডি পেরিয়েছে, তাদের কলেজে ভর্তি করে নিতে একাদশ শ্রেণির ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।

কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করা যাবে ৩০ জুলাই থেকে। ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। আর ক্লাস শুরু হবে ১৫ সেপ্টেম্বর।

বরাবরের মত এবারও শিক্ষার্থীদের ফলের ভিত্তিতে অনলাইনে ভর্তির আবেদন করতে হবে। তিন পর্যায়ে আবেদন গ্রহণ করা হবে।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত একাদশে ভর্তির নীতিমালায় জানানো হয়, আগামী ৩০ জুলাই থেকে ১১ অগাস্ট পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ের আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।

১২ অগাস্ট প্রথম পর্যায়ের আবেদন যাচাই, বাছাই ও নিষ্পত্তি করা হবে। ১৩ ও ১৪ অগাস্ট পুনঃনিরীক্ষণে ফল পরিবর্তিত শিক্ষার্থীদের আবেদন গ্রহণ করা হবে। ১৫ অগাস্ট পছন্দক্রম পরিবর্তনের সুযোগ পাবেন ভর্তিচ্ছুরা।

এরপর ২০ অগাস্ট রাত ৮টায় প্রথম পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে। ফল প্রকাশের পর ২২ অগাস্ট রাত ৮টার মধ্যে প্রথম পর্যায়ে নির্বাচিতদের নির্বাচন নিশ্চায়ন করতে হবে। নিশ্চায়ন না করলে প্রথম পর্যায়ে নির্বাচন ও আবেদন বাতিল হয়ে যাবে। পরে নতুন করে ফি দিয়ে আবেদন করতে হবে।

২৩-২৫ অগাস্ট দ্বিতীয় পর্যায়ের ও ৩১ অগাস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর তৃতীয় পর্যায়ের আবেদন গ্রহণ করা হবে।

২৮ অগাস্ট রাত ৮টায় দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল ও প্রথম মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ করা হবে। ২৯ ও ৩০ অগাস্ট দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্বাচন নিশ্চায়ন করতে হবে।

এরপর ৩ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায় তৃতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল ও দ্বিতীয় মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ করা হবে। ৪ অগাস্ট তৃতীয় পর্যায়ের নির্বাচন নিশ্চায়ন করতে হবে। সর্বশেষ মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ করা হবে ৫ অগাস্ট।

অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া

অনলাইনে www.xiclassadmission.gov.bd এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একাদশে ভর্তির আবেদন করতে পারবেন। সেজন্য তাদের ২২০ টাকা আবেদন ফি জমা দিতে হবে।

কোটা

একাদশে ভর্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কলেজ বা মাদ্রাসার ৯৩% আসন সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে যা মেধার ভিত্তিতে নির্বাচন করা হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১% এবং অধীনস্থ দপ্তর/সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সন্তানদের ক্ষেত্রে ১% সহ মোট সর্বমোট ২% আসন মহানগর, বিভাগীয় ও জেলা সদরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য নূন্যতম যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে সংরক্ষিত থাকবে।

যদি আবেদনকারীর সংখ্যা বেশি হয় সেক্ষেত্রে তাদের নিজেদের মধ্যে মেধার ভিত্তিতে ভর্তির সুযোগ পাবে। আবেদনের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক দপ্তর প্রধানের প্রত্যয়নপত্র দাখিল করতে হবে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যার ভর্তির জন্য ৫% আসন সংরক্ষিত থাকবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যাদের আসন নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রমাণপত্র বা গেজেটের সত্যায়িত কপি আবেদপত্রের সাথে সংযুক্ত করতে হবে এবং ভর্তির সময় মূল কপি প্রদর্শন করতে হবে।

এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ইস্যু করা মুক্তিযোদ্ধা সনদ যথাযথভাবে যাচাই করে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।

মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা পাওয়া না গেলে মেধা তালিকা থেকে সেসব আসনে ভর্তি করতে হবে। কোনো অবস্থায় আসন শূন্য রাখা যাবে না।

গ্রুপ নির্বাচন

বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা যে কোনো গ্রুপে (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায়) ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে।

মানবিক ও ব্যবসায় বিভাগের শিক্ষার্থীরা মানবিক ও ব্যবসায়- এই দুই গ্রুপের একটিতে আবেদন করতে পারবে।

মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম কার্যকর হবে।

যে কোনো গ্রুপ (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায়) থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ও সংগীত গ্রুপের যে কোনো একটিতে আবেদন করতে পারবেন।

মেধাক্রম নির্ধারণ

সমান জিপিএ প্রাপ্তদের ক্ষেত্রে সর্বমোট প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারণ করা হবে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে গ্রেড পয়েন্ট ও প্রাপ্ত নম্বর সমতুল্য করে হিসাব করতে হবে। তাছাড়া বিভিন্ন বছরের গ্রেড পয়েন্ট ও প্রাপ্ত নম্বর সমতুল্য করে হিসাব করতে হবে।

বিজ্ঞান গ্রুপে ভর্তির ক্ষেত্রে সমান মোট নম্বর প্রাপ্তদের মেধাক্রম নির্ধারণের ক্ষেত্রে সাধারণ গণিত ও উচ্চতর গণিত বা জীববিজ্ঞানে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনায় আনতে হবে। যদি তার পরেও প্রার্থী বাছাইয়ে জটিলতা নিরসন না হয়, তবে পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়নে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনায় আনতে হবে।

মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের ক্ষেত্রে সমান মোট নম্বর বিষয়টি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, গণিত ও বাংলা বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনায় আনতে হবে।

এক গ্রুপের প্রার্থী অন্য গ্রুপে ভর্তির ক্ষেত্রে জিপিএ একই হলে সর্বমোট প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারণ করা হবে। এক্ষেত্রে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে জটিলতা নিরসন না হলে পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, গণিত ও বাংলা বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনায় আনতে হবে।

স্কুল ও কলেজ এবং সমমানের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে নিজস্ব প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত যোগ্যতা সাপেক্ষে স্ব স্ব বিভাগে (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা) অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভর্তির সুযোগ পাবেন। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব শিক্ষার্থীদের স্ব স্ব বিভাগে ভর্তি নিশ্চিত করেই কেবল অবশিষ্ট শূন্য আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে হবে।

ভর্তি প্রক্রিয়া ও ক্লাস শুরু

আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে। এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে বিভিন্ন কলেজ ও মাদ্রাসায় একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু হবে।

ভর্তি ফি

ঢাকা মেট্রোপলিটনের এমপিওভুক্ত কলেজে বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে সর্বোচ্চ ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার টাকা।

ঢাকা ছাড়া অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকায় বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনের কলেজে ভর্তির ফি হবে ৩ হাজার টাকা।

জেলা পর্যায়ের কলেজে দুই ভার্সনের ভর্তির ফি ২ হাজার ও উপজেলা বা মফস্বল পর্যায়ের কলেজে দুই ভার্সনে ভর্তির ফি দেড় হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ননএমপিও বা আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে উন্নয়ন ফি, সেশন চার্জ ও ভর্তি ফি ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার কলেজের বাংলা ভার্সনের জন্য সাড়ে ৭ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনের জন্য সাড়ে ৮ হাজার টাকা।

ঢাকা ছাড়া অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকার ননএমপিও কলেজে বাংলা ভার্সনে ভর্তির জন্য ৫ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ভর্তির জন্য ৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ের কলেজের বাংলা ভার্সনে ৩ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ৪ হাজার টাকা ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। আর উপজেলা বা মফস্বল পর্যায়ের কলেজে বাংলা ভার্সনে আড়াই হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ৩ হাজার টাকা ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।

সরকারি কলেজগুলো সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ভর্তি ফি নেবে। দরিদ্র, মেধারী ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য কলেজগুলোকে ফি যতদূর সম্ভব মওকুফে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

শিক্ষা বোর্ড শিক্ষার্থীদের থেকে ভর্তির প্রাথমিক নিশ্চায়ন করার সময় ৩৩৫ টাকা ভর্তি ফি গ্রহণ করবে।

যেসব কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি নিষিদ্ধ

স্থাপনের অনুমতি আছে, কিন্তু পাঠদানের প্রাথমিক অনুমতি নেই, এমন কলেজ বা সমমানের প্রতিষ্ঠান কোন অবস্থাতেই শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না।

পাঠদানের প্রাথমিক অনুমতিপ্রাপ্ত অথবা স্বীকৃতিপ্রাপ্ত কোনো কলেজ বা সমমানের প্রতিষ্ঠানে অনুনোমোদিত ক্যাম্পাস এবং অনুনোমোদিত কোন বিষয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না।