কুমিল্লার মুরাদনগরে এক হিন্দু নারীকে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে গভীর রাতে বিক্ষোভ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শনিবার রাত ১২টার পর থেকে টিএসসি, রাজু ভাস্কর্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মোড়ে জড়ো হতে থাকেন সাধারণ শিক্ষার্থী ও প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘ধর্ষণের রাজনীতি চলবে না’, ‘ধর্ষকদের রক্ষা নয়’, ‘নতুন বাংলাদেশে নিরাপত্তা চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। অভিযুক্ত ধর্ষক স্থানীয় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে দ্রুত গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে তারা বিক্ষোভ করতে থাকেন।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, মুরাদনগরে বাবার বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া এক হিন্দু নারীকে ঘরের দরজা ভেঙে ধর্ষণ করা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি স্থানীয় বিএনপির প্রভাবশালী নেতা। এই ধরনের ঘটনা নতুন নয়- গত কয়েক মাসে বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের একের পর এক অভিযোগ উঠে এসেছে। এসব আর বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।
ঢাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ৫ আগস্টের পর ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’কে ঘিরে যে নতুন রাজনৈতিক চিত্র আমরা দেখছি, সেখানে যদি নিরাপত্তাহীনতা বাড়ে, তবে সেটা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা। যারা এখনই নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে, তারা ক্ষমতায় গেলে কী ঘটবে?।
বিক্ষোভে বক্তারা দাবি করেন, এই ঘটনার পেছনে দলীয় মদদ ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি রয়েছে। তারা সরকারের কাছে দাবি জানান, এ ধরনের ঘটনায় জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে এবং অপরাধী যত বড়ই হোক, তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
সংক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, জনগণের বিপ্লব হয়েছে নিরাপত্তার জন্য। আজ যদি আমাদের বোনেরা নিজ ঘরে নিরাপদ না থাকেন, তাহলে এই বিপ্লবের অর্থ কী?
মিছিলটি টিএসসি থেকে শুরু হয়ে রাজু ভাস্কর্য, ভিসি ছত্তর, মধুর ক্যান্টিন, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ঘুরে আবার টিএসসি চত্বরে এসে শেষ হয়।
এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত ধর্ষণের ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেফতারের খবর মেলেনি। শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন, দোষীকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দেওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।