ঢাকা | শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫,৬ আষাঢ় ১৪৩২

আন্দোলনে যোগ দিতে ২৪টি বাসে এসেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন আজ বৃহস্পতিবারও রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে অব্যাহত রয়েছে। আন্দোলনে যোগ দিতে ২৪টি বাসে করে দুপুর ২টার দিকে কাকরাইল মোড়ে এসেছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার বিচার এবং তিন দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো সড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

আন্দোলনকারীদের অবস্থানের কারণে কাকরাইল মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। কাকরাইল মোড় থেকে পল্টনের দিকের সড়কে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট।

সকাল সাড়ে নয়টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্যের সামনে দিয়ে অন্তত ২৪টি বাস কাকরাইল মোড়ের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এসব বাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তারা আন্দোলনস্থলে যান। দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে চলমান আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষার্থীরা।

গতকাল বুধবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া কর্মসূচি রাতেও কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থানের মাধ্যমে অব্যাহত থাকে। আজ সকাল থেকে নতুন করে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন।

ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি রাকিব হাসান জানান, সকালে তিনটি বাসে করে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে যোগ দিতে রওনা দিয়েছেন। ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকেও শিক্ষার্থীরা এসে একাত্মতা প্রকাশ করছেন।

কাকরাইল মসজিদ মোড়ে সরজমিনে দেখা যায়, আন্দোলনকারীরা কেউ সড়কে শুয়ে, কেউ বসে স্লোগান দিচ্ছেন—‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’, ‘চুপ কেন যমুনা, খালি হাতে ফিরবো না’।

এর আগে গত বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় শিক্ষার্থীরা ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি নিয়ে যাত্রা শুরু করলে কাকরাইল এলাকায় দুপুর ১টার দিকে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। এ সময় লাঠিপেটা, টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে মিছিল ছত্রভঙ্গ করা হয়। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে ১০জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নেন এবং স্লোগানে জানান, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেবো রক্ত’। বিকেলে বৃষ্টি হলেও আন্দোলন থামেনি, শিক্ষার্থীরা ভিজেই প্রতিবাদ চালিয়ে যান।

শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবিগুলো হলো-

১. আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি কার্যকর করতে হবে।
২. ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কোনো কাটছাঁট না করে অনুমোদন করতে হবে।
৩. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের প্রকল্প পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন দিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করতে হবে।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আন্দোলনের প্রতি একাংশ শিক্ষকও সংহতি প্রকাশ করেছেন।