বিশ্বের প্রধান ‘শিক্ষাকেন্দ্র’ হয়ে ওঠার পথে চীনাদের সবচেয়ে বড় ভরসা আফ্রিকার শিক্ষার্থীরা। মহামারি আঘাত হানার আগে দেশটিতে ৮০ হাজারেরও বেশি আফ্রিকান শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছিলেন। আফ্রিকা থেকে শিক্ষার্থী টানায় ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র (৪৭ হাজার জন) ও যুক্তরাজ্যকে (২৯ হাজার জন) ছাপিয়ে গেছে চীনারা। এখন এগোচ্ছে সবার ওপরে থাকা ফ্রান্সের দিকে (১ লাখ ১২ হাজার জন)।
আফ্রিকায় শিক্ষাবৃত্তির মতো বিশেষ সুবিধাগুলোর রীতিমতো বন্যা বইয়ে দিয়েছে চীন। এডুকেশন সাব সাহারান আফ্রিকা নামে একটি ব্রিটিশ দাতব্য সংস্থার হিসাব অনুসারে, আফ্রিকার সাহারা অঞ্চলে পাওয়া ৪৩ শতাংশ শিক্ষাবৃত্তিই গেছে চীন সরকারের কাছ থেকে।
এখন বহু আফ্রিকান শিক্ষার্থীই আন্তর্জাতিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘টেক আস ব্যাক টু চায়না’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে চীনে ফেরার আকুতি জানাচ্ছেন। অনেকেরই অভিযোগ, প্রয়োজনীয় কোভিড-১৯ টেস্ট এবং কোয়ারেন্টাইনে রাজি থাকা সত্ত্বেও চীন সরকার তাদের আবেদনে সাড়া দিচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা একটি লিখিত আবেদনে বলেছেন, তাদের অনেক সময় মাঝরাতে অনলাইন ক্লাসে যোগ দিতে হয়। এধরনের ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য তারা আর ফি দিতে চান না।
আফ্রিকান শিক্ষার্থীদের এই হতাশা আরও বাড়িয়েছে চীনে গত বছরের এক বর্ণবাদী ঘটনা। সেসময় দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংঝু শহরে কয়েকজন নাইজেরীয় নাগরিক করোনা পজিটিভ শনাক্ত হওয়ার পর কয়েক ডজন আফ্রিকান শিক্ষার্থীকে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল।
তবে এত সমস্যা থাকা সত্ত্বেও চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখনও আফ্রিকান শিক্ষার্থীদের কাছে প্রধান আকর্ষণ। সেখানকার শীর্ষস্থানীয় একটি কলেজে এক বছর পড়তে চার হাজার ডলারের বেশি খরচ হয় না, যা ইউরোপ-আমেরিকার তুলনায় ১০ ভাগের এক ভাগ মাত্র। তাছাড়া চীনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হওয়া এবং স্বাভাবিক সময়ে ভিসা পাওয়াও তুলনামূলক সহজ। একারণে হিবা বরোকিয়ার মতো বেশিরভাগ বিদেশি শিক্ষার্থীর কাছে এখনও চীনই ‘সেরা গন্তব্য’।
সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট