ঢাকা | মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫,৩১ আষাঢ় ১৪৩২

গিনেস বুকে জায়গা পাওয়া ১০ ক্রীড়াবিদ

১৭৫৯ সালে আয়ারল্যান্ডের উদ্যোক্তা ও জনহিতৈষী আর্থার গিনেস ডাবলিনে গিনেস ব্রিউরি নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। পরবর্তী সময়ে গিনেস ব্রিউরির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হন স্যার হিউ বিভার।

গিনেস বুকের ধারণাটা প্রথম বিভারের মাথা থেকেই আসে। তাঁর সঙ্গে যমজ ভাই নরিস ম্যাকহোয়ারটার ও রস ম্যাক ম্যাকহোয়ারটার মিলে ১৯৫৫ সালের আগস্টে লন্ডনে বুকের শুরুটা করেন। তখন থেকেই পৃথিবীর অদ্ভুত, চমকপ্রদ, অনন্য, চূড়ান্ত বা অভাবনীয় অর্জন গিনেস বুকে সংরক্ষণ করে রাখা হচ্ছে। বিশ্ব রেকর্ডধারীর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে সনদও।

২০০০ সালে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের নাম বদলে রাখা হয় গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস। বিশ্বের সব বয়সের, সব অঙ্গনের মানুষই এই বইয়ে নাম তুলেছেন। ক্রীড়াবিদেরাও গড়েছেন অনেক অনন্য কীর্তি। তাই নাম উঠেছে তাঁদেরও।

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা পেয়েছেন, এমন ১০ ক্রীড়াবিদকে নিয়েই এ আয়োজন—

শচীন টেন্ডুলকার
ভারতের কিংবদন্তি এই ক্রিকেটার বেশ কয়েকটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের মালিক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান, একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০০ সেঞ্চুরি, সবচেয়ে বেশি ২০০ টেস্ট খেলা, টেস্টে সর্বোচ্চ ৬৮টি ফিফটি…এমন ১৯টি বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন তিনি। এত সব কীর্তির জন্য নিজেদের হীরকজয়ন্তীতে (৬০ বছর পূর্তি) তাঁকে সম্মানিত করেছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ।

লিওনেল মেসি
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কও কয়েকটি বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন। সবচেয়ে বেশি আটটি ব্যালন ডি’অর, এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ গোল (২০১২ সালে ৯১টি), লা লিগায় সবচেয়ে বেশি ৪৭৪টি গোল, ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের শীর্ষ পাঁচ লিগে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোল (২০১১–১২ মৌসুমে ৫০ গোল) ও রেকর্ড ৪৪টি ট্রফি জিতে গিনেস বুকে নাম তুলেছেন।

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো
পর্তুগালের হয়ে ২২১ ম্যাচে করেছেন ১৩৮ গোল। আন্তর্জাতিক ফুটবলে যা একই সঙ্গে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা ও সবচেয়ে বেশি গোল করার রেকর্ড। এর সুবাদে গিনেস বুকে জায়গা করে নিয়েছেন সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার।

রজার ফেদেরার
সবচেয়ে বেশি ২৩৭ সপ্তাহ ছেলেদের টেনিস র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকা, প্রথম পুরুষ খেলোয়াড় হিসেবে ২০ গ্র্যান্ড স্লাম জয়, সবচেয়ে বেশি ৩৬৯ গ্র্যান্ড স্লাম ম্যাচ জয়, টানা ২৩ বার গ্র্যান্ড স্লামের সেমিফাইনালে এবং টানা ৩৬ বার কোয়ার্টার ফাইনালে নাম লেখানো, ছেলেদের এককে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ১০টি গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপা ধরে রাখা…এমন অভাবনীয় নজির গড়ে ৩০ বার গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের জায়গা করে নিয়েছেন সুইস কিংবদন্তি।

টাইগার উডস
একসময় গলফের সমার্থক ছিলেন তিনি। সবচেয়ে বেশি ৬৮৩ সপ্তাহ ও রেকর্ড টানা ২৮১ সপ্তাহ ছিলেন র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে। এ ছাড়া টানা চারবার বড় টুর্নামেন্ট জয়, সবচেয়ে বড় ব্যবধানে (১২ শট) জয় ও পেশাদার গলফ সফরে (পিজিএ ট্যুর) সবচেয়ে বেশি ৮২ জয়ে গিনেস বুকে নাম তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এই গলফার।

মাইকেল ফেলপস
সাঁতার অঙ্গনের শেষ কথা তিনি। অলিম্পিকে জিতেছেন রেকর্ড ২৮টি পদক, এর মধ্যে ২৩টি সোনা। অলিম্পিকে এককভাবে সাঁতারে জিতেছেন সর্বোচ্চ ১৩টি সোনা, ২০০১ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে সাঁতারে গড়েছেন ৩৯টি বিশ্ব রেকর্ড। এমন একজনের নাম গিনেস বুকে না উঠে পারে!

উসাইন বোল্ট
তাঁকে বিশ্বের দ্রুততম মানব হিসেবে চেনেন সবাই। ১০০ মিটার (৯.৫৮ সেকেন্ড) ও ২০০ মিটার (১৯.১৯ সেকেন্ড) স্প্রিন্টে গড়েছেন বিশ্ব রেকর্ড। এ ছাড়া ৪ গুণিতক ১০০ মিটার রিলেতেও দলীয়ভাবে গড়ে নাম তুলেছেন গিনেস বুকে।

ওয়েইন রুনি
২০০৫ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা ৭ বছর ফিফা ভিডিও গেমের কাভারে ছিলেন সাবেক এই ইংলিশ ফুটবলার। প্রিমিয়ার লিগে এক ক্লাবের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোলের (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ১৮৩টি) রেকর্ডটাও তাঁর। একসময় ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ গোলদাতাও ছিলেন। এসব কীর্তিতেই গিনেস বুকে নাম উঠেছে তাঁর।

ডেলে আলী
ইংল্যান্ড জাতীয় দলের সাবেক এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে রেকর্ড ৮ বার ‘নাটমেগ’ (প্রতিপক্ষের দুই পায়ের মাঝ দিয়ে বল ঠেলে আবার বলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া) করে গিনেস বুকে জায়গা করে নেন। তখন তিনি খেলতেন ইংলিশ ক্লাব টটেনহামে। বর্তমানে খেলছেন ইতালিয়ান ক্লাব কোমোয়।

সেরেনা উইলিয়ামস
টেনিসের রানি বলতে সবার আগে তাঁর নাম আসে। উন্মুক্ত যুগে মেয়েদের এককে জিতেছেন সর্বোচ্চ ২৩ গ্র্যান্ড স্লাম, এককে জিতেছেন রেকর্ড ৩৬৭ গ্র্যান্ড স্লাম ম্যাচ। টানা ১৮৬ সপ্তাহ ছিলেন র‍্যাঙ্কিংয়ের ১ নম্বর। এ ছাড়া নির্দিষ্ট একটি গ্র্যান্ড স্লাম সবচেয়ে বেশিবার (অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ৭ বার) জয়ের রেকর্ডটাও তাঁর। কিংবদন্তি এই টেনিস খেলোয়াড়কে একাধিকবার সম্মানিত করেছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ।